কি খেলে রক্তে প্লাটিলেট বাড়ে

কি খেলে রক্তে প্লাটিলেট বাড়ে ও কি খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ে এই সব ধরনের বিভিন্ন বিষিয় জানতে হলে আপনি এই আটিকেলটি পড়ুন। তাহলে আপনি রক্ত প্লাটিলেট সম্পর্কে বিষয় গুলো বুজতে পারবেন।
কি খেলে রক্তে প্লাটিলেট বাড়ে
আপনার জন্য এই পোষ্টের নিচের দিকে গর্ভাবস্থায় কি খেলে শরিরে রক্ত বাড়ে এই সব সম্পর্কে কিছু পয়েন্ট যোগ করা হয়েছে। আপনি যদি সে পয়েন্ট গুলো প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ভালো করে মনোযোগ সহকারে পড়েন। আশা করি তাহলে আপনি এই পোষ্টের মাধ্যেমে কিছু অজানা তথ্য গুলো জানতে পারবেন।

ভুমিকা

প্লাটিলেট হলো রক্তের এক প্রকার ছোট ছোট কণিকা বা অণুচক্রিকা। যা মানুষের শরিরে রক্ত জমাট লাগাতে এবং রক্ত বের হওয়া বন্ধ করতে সাহায্য করে। প্লাটিলেট অস্থিমজ্জা থেকে উৎপন্ন হয় এবং রক্তের সঞ্চালনে অংশ নেয়। প্লাটিলেটের স্বাভাবিক সংখ্যা প্রতি ঘন মিলিলিটারে দেড় লাখ থেকে চার লাখ। এই পরিমাপের চাইতে প্লাটিলেটের মাত্রা কমে গেলে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি দেখা দেয়।

কি খেলে রক্তে প্লাটিলেট বাড়ে

রক্তে প্লাটিলেট বাড়াতে আপনি যেসব খাবার খেতে পারেন তা হলো। পেঁপেকে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ পুষ্টি থাকে যা আপনার শরীরে প্লাটিলেট বাড়াতে সাহায্য করে। আপনি পেঁপের জুস বা পাকা পেঁপে খেতে পারেন। ব্রোকলি ভিটামিন কে এর একটি ভালো উৎস যা রক্ত জমাট বাঁধতে ও রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে প্রয়োজন।


আপনি ব্রোকলি সালাদ, স্যুপ বা ভাজি হিসেবে খেতে পারেন। বেদানা আয়রন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা রক্তে প্লাটিলেট বাড়াতে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। আপনি বেদানার রস বা এমনি ফলটি খেতে পারেন। পালং শাকে রয়েছে আয়রন ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি ভালো উৎস। যা রক্তে প্লাটিলেট বাড়াতে ও রোগ প্রতিরোধ

ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। আপনি পালং শাক ভাজি বা স্যুপ হিসেবে খেতে পারেন। গাজর ভিটামিন এ ও আয়রনের একটি ভালো উৎস যা রক্তে প্লাটিলেট বাড়াতে ও দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। আপনি গাজরের জুস বা সালাদ খেতে পারেন। এছাড়াও আপনি রক্তে প্লাটিলেট বাড়াতে আরো কিছু খাবার খেতে পারেন। যেমন-

  • মিষ্টি কুমড়া রক্তের প্লাটিলেট বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া মিষ্টি কুমড়ার জুসও খেতে পারেন।
  • শিম ভিটামিন বি নাইন সমৃদ্ধ শিম প্লাটিলেট উন্নত করতে পারে।
  • ডাবের পানিতে খনিজ বা ইলেকট্রোলাইটস আছে, যা আপনার শরিরে প্লাটিলেট বাড়াতে সাহায্য করে।
  • লেবুর রসে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে। ভিটামিন সি রক্তে প্লাটিলেট বাড়াতে সাহায্য করে।
  • আমলকিতেও আছে প্রচুর ভিটামিন সি। আমলকী খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং প্লাটিলেট ধ্বংস হওয়া থেকে রক্ষা পায়।

তবে, এই খাবারগুলি খেলে যদি আপনার অসুস্থতা বাড়ে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করবেন।

গর্ভাবস্থায় কি খেলে শরিরে রক্ত বাড়ে

গর্ভাবস্থায় রক্ত বাড়ানোর জন্য আপনাকে কিছু খাবার গুলো নিয়মিত খেতে হবে। এই খাবারগুলো হলো-
গর্ভাবস্থায় মা দের শরীরে রক্ত স্বল্পতা দেখা দেয় অনেক ক্ষেত্রে। গর্ভবতী মা যদি রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় অর্থাৎ গর্ভবতী মা যদি রক্ত কম থাকে তাহলে শুধু মা না শিশুর ও ক্ষেত্রে অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই অবশ্যই একজন গর্ভবতী মাকে

শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খেয়াল রাখতে হবে যে তার শরীরের রক্তের পরিমাণটি ঠিকমতো রয়েছে কিনা। গর্ভবতী মা যদি চেকআপের মাধ্যমে জানতে পারেন যে তার শরীরে রক্তের পরিমাণ কম রয়েছে তাহলে অবশ্যই তাকে সেভাবেই নিয়ম অনুযায়ী খাবার দাবার মেইনটেইন করে নিতে হবে। যাতে করে তার শরীরে রক্তের পরিমাণ ঠিকঠাক মতো হয়ে যায়।

আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যা আপনার শারিরের রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আয়রন সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে আপনি খেতে পারেন মাংস, মাছ, ডিম, ডাল, শাকসবজি, কিসমিস, খেজুর, অ্যাপ্রিকট ইত্যাদি। আয়রন শোষণ বাড়াতে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল যেমন কমলা, লেবু, আমলকি ইত্যাদি খাওয়া উচিত।

ফোলেট সমৃদ্ধ খাবার যা আপনার শরিরে একটি বি-কমপ্লেক্স ভিটামিন ও রক্ত তৈরি করতে সহায়তা করে। ফোলেট সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে আপনি খেতে পারেন সবুজ শাকসবজি, ব্রোকলি, কলিফ্লাওয়ার, বাদাম, ডালিম, কমলা, মধু ইত্যাদি। ভিটামিন B১২ সমৃদ্ধ খাবারে রয়েছে আরেকটি বি-কমপ্লেক্স ভিটামিন যা রক্তের কোষ বিভাজন ও বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন।

ভিটামিন B১২ সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে আপনি খেতে পারেন মাংস, মাছ, ডিম, দুধ, পনির, দই, চিজ ইত্যাদি। এছাড়াও আপনাকে নিয়মিত পানি পান করতে হবে যাতে রক্তের ঘনত্ব বাড়ে। একজন গর্ভবতী মায়ের অবশ্যই গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন হয়ে থাকে। এজন্য অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।


যে খাবারে যথেষ্ট পরিমাণে প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম আছে। সে খাবার গুলো বেশি বেশি রোজকার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আপনি আয়রন ও ফোলেট সমৃদ্ধ ট্যাবলেট ও সেবন করতে পারেন। আর আপনার গর্ভাবস্থায় রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করানো উচিত।

কি খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ে

হিমোগ্লোবিন হলো রক্তের একটি প্রোটিন যা অক্সিজেন বহন করে। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা যথেষ্ট না থাকলে রক্তাল্পতা হতে পারে। রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে কিছু খাবার খেতে পারেন, যেমন-লোহসমৃদ্ধ খাবারে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লোহসমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে মাংস, মুরগির কলিজা, ডিম, ঝিঙে, শাকসবজি,

ডাল, কিশমিশ, খেজুর, আপেল, বেদানা, ডালিম ইত্যাদি। ফোলেট ও ভিটামিন বি ১২ সমৃদ্ধ খাবার ফোলেট ও ভিটামিন বি ১২ রক্তের কোষ বিভাজনে সহায়তা করে। এই উপাদানগুলি রয়েছে ব্রোকলি, পালংশাক, কাঁচা কলা, আভাকাডো, দুধ, পনির, দই, মাছ, চিংড়ি, কাঁচা মরিচ, লেবু, কমলা, টমেটো, স্ট্রবেরি ইত্যাদি।

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার ভিটামিন সি লোহার শোষণে সহায়তা করে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে কমলা, লেবু, আমলকি, টমেটো, গোলমরিচ, ডার্ক চকোলেট, তরমুজ, কুমড়ার বিচি, জলপাই ইত্যাদি। এছাড়াও আপনি আরো কিছু খাবার খেতে পারেন সেগুলো হলো-

  • বাদাম খেলে হিমোগ্লোবিন বাড়ে। নিয়মিত পুষ্টিকর চিনাবাদাম এবং অন্যান্য বাদাম আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
  • নিয়মিত দুধ খেতে পারেন তাহলে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে আপনার অনেক বড় উপকারে আসবে।
  • হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য আপনি নিয়মিত ডিম খেতে পারেন।
  • ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন কমলা, লেবু, স্ট্রবেরি, টমেটো, গোলমরিচ ডার্ক চকোলেট খেতে পারেন।

তবে উপরের এই খাবারগুলি খেলে আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর সম্ভাবনা বাড়বে। আপনি নিয়মিত পানি পান, পর্যাপ্ত ঘুম, মাত্রাতিরিক্ত চা-কফি এড়ানো, স্মোকিং বন্ধ করা, সুস্থ ও সম্পূর্ণ খাদ্য গ্রহণ করা রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সহযোগিতা করে। তবে, এই তথ্যগুলি সাধারণ পরামর্শ হিসেবে গ্রহণ করুন এবং যেকোনো চিকিৎসার পরামর্শের জন্য ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।

কি খেলে রক্ত পরিষ্কার হয়

আপনার শরিরের রক্ত পরিষ্কার রাখতে আপনি কিছু খাবার খেতে পারেন। সে খাবার গুলো হলো- নিম, গাজর, রসুন, হলুদ, লেবু, অ্যাভোকাডো, ব্রকলি, বিট, লেটুস পাতা, আপেল এবং আঙ্গুর। এই খাবারগুলি রক্তে থাকা টক্সিন, কোলেস্টেরল, ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য ক্ষতিকর পদার্থ দূর করে এবং রক্তের সঞ্চালন, হিমোগ্লোবিন, লিভার ও কিডনির কার্যকারিতা উন্নত করে।

এছাড়াও, পর্যাপ্ত পানি পান করা, উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার এড়ানো, চিনির বদলে গুড় খাওয়া এবং ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খাওয়া তাহলে আপনার শরিরের রক্ত পরিষ্কার হয়ে যাবে। চলুন আমরা নিচে জেনে নি উপরের খাবার গুলো কি কি কাজ করে থাকে। নিম রক্তকে পরিশোধনে সাহায্য করে। এটি অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিফাঙ্গাল ও

প্রদাহরোধী উপাদান ধারণ করে। প্রতিদিন এক কাপ হালকা গরম পানির মধ্যে এক ফোঁটা নিমের রস দিন এবং পান করুন। গাজরে রয়েছে গ্লুটাথাইয়োনি, যা রক্ত পরিশোধন করতে সাহায্য করে। এছাড়া আপনি গাজর কাঁচাও খেতে পারেন। সবুজ শাকসবজি রক্ত পরিশোধক হিসেবে কাজ করে। সবুজ শাক রক্তকে জমাট বাঁধা ঠিক করে এবং রক্ত পরিষ্কার

করতে সহায়তা করে থাকে। গুড় রক্ত পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে সাধারণত বেশি ব্যবহার করা হয় হামদার্দের সিরাপ গুলোর মধ্যে। এটি রক্ত পরিষ্কার করে এবং রক্ত জমাট বাঁধা ঠিক করে। রসুন আভ্যন্তরীণ প্যারাসাইট এবং ভাইরাস আপনার শরীর থেকে বিশেষত রক্ত এবং অন্ত্র থেকে দূর করতে পারে। হলুদ রক্তের নালি পরিষ্কার করে এবং রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে থাকে।

লেবুতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, প্যাকটিন, পটাশিয়াম এবং ক্যালসিয়াম রয়েছে। এটি দূষিত রক্ত দূর করতে সাহায্য করে। অ্যাভোকাডো নানা পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ এবং কোলেস্টেরল কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। রক্ত থেকে ক্ষতিকর টক্সিন পদার্থ দূর করতে ব্রকলি বেশ গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। বিট অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং নানা পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ


এই সবজি রোগ জীবাণু থেকে শরীরকে রক্ষা করে থাকে। এবং রক্ত থেকে টক্সিন দূর করে লিভারকে সুস্থ রাখে। লেটুস পাতা সালাদের পরিচিত উপাদান লেটুস। এটি দেহে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে থাকে। আপেল একটি সহজলভ্য ফল যাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল এবং ফাইবার আছে। এ উপাদানগুলো লিভারের টক্সিন দূর করতে সহযোগিতা করে থাকে।

আর আঙ্গুর রক্তের দূষিত পদার্থ দূর করে থাকে। আশা করি আপনি এই তথ্যগুলিতে উপকার পাবেন। আপনার স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য সবুজ শাকসবজি, ফল এবং পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করুন। আর উপরের এই খাবারগুলি নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে আপনি আপনার রক্তকে পরিষ্কার রাখতে পারেন।

শেষ কথা

আপনাদের সকলের কাছে যদি আমার পোষ্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে পোষ্টটি আপনাদের বন্ধু-বান্ধবী সকলের মাঝে শেয়ার করে দিন। আর নিয়মিত আমার কাছে থেকে পোষ্ট পাওয়ার জন্য আমার ওয়েবসােইটটি ফলো করে রাখুন। নিয়মিত নতুন নতুন আপডেট পেতে ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। পোষ্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url