ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল একসাথে কয়টি বাচ্চা দেয়
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল একসাথে কয়টি বাচ্চা দেয় ও কোন জাতের ছাগল বেশি বাচ্চা দেয়
এই সব সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্য গুলো জানতে হলে আপনি আমাদের সাথেই থাকুন।
তাহলে আপনি তথ্য খুব সহজে বুজতে পারবেন।
এই পোষ্টের নিচের দিকে ছাগল সম্পর্কে আপনার জন্য কিছু পয়েন্ট যোগ করা হয়েছে। সে
পয়েন্ট গুলো আপনি যদি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েন। আশাকরি তাহলে
আপনার ছাগল সম্পর্কে বিষয় গুলো বুজতে অসুবিধা হবে না।
ভুমিকা
ছাগল হল একধরনের গৃহ পালিত পশু যা মাংস, দুধ, চামড়া দেয়। ছাগল দুই প্রজাতির হতে
পারে- বোকা বা ছাগল এবং ছাগলি বা ছাগনি। বোকা বা ছাগল হলো নর বা ছেলে প্রাণী এবং
ছাগলি বা ছাগনি হলো মহিলা বা মেয়ে প্রাণী। ছাগল বাংলাদেশের অনেক জায়গায় পালিত
হয়। বিশেষ করে নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, রাজশাহী,
আরও পড়ুনঃ
কোন জাতের গরু বেশি বড় হয়
রংপুর ও দিনাজপুর জেলায় ছাগল পালন করা হয়। ছাগল বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের
অংশ হিসেবে গণ্য। ছাগল বিভিন্ন উৎসব যেমন, হেন্দুদের পূজার জন্য বলি হিসেবে
ব্যবহৃত হয়। মুসলিমদের কুরবানি ও অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য ছাগনের দুধ ও
মাংস পুষ্টিকর এবং স্বাদিষ্ট। ছাগনের চামড়া ও কাঁচি বিভিন্ন শিল্প ও কারুকালায়
ব্যবহৃত হয়।
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল একসাথে কয়টি বাচ্চা দেয়
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল প্রতি মাসে দুইবার বাচ্চা দেয়। প্রতি বারে অন্তত দুইটি
থেকে সর্বোচ্চ ৫টি পর্যন্ত বাচ্চা দিতে পারে। এই ছাগল প্রজাতি ১৪ মাসে দুইবার
বাচ্চা দেয়। এই প্রজাতির ছাগলের বাচ্চা উৎপাদনের হার অন্যান্য ছাগল প্রজাতির
তুলনায় বেশি। এই ছাগল প্রজাতির বাচ্চাদের মৃত্যু হার অন্যান্য ছাগল প্রজাতির
তুলনায় কম।
এই ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল দুধ কম দিয়ে থাকে। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল বাংলাদেশ,
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং ওড়িশা অঞ্চলের পাওয়া ছাগলের একটি জাত। এদের
শরীরের কাঠামো শক্তপোক্ত এবং পেশিবহুল হয়ে থাকে। খাদ্য ও কৃষি সংস্থার গবেষণায়
বলা হয়েছে,
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল দুধ উৎপাদন এবং দৈর্ঘ্য-প্রস্থ-ওজনের দিক থেকে অন্যসব
জাতের ছাগলের চেয়ে পিছিয়ে। এই সব দিক দিয়ে বলা যায় যে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল
বেশি বাচ্চা দিয়ে থাকে।
কোন জাতের ছাগলের বেশি বড় হয়
বিভিন্ন জাতের ছাগলের মধ্যে বড় হওয়ার ক্ষমতা বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তবে,
সাধারণত বেয়ার, কালাহারি, রাম বা যমুনাপাড়ি, শিরোহি, বিটল ও ফরমের ইত্যাদি
জাতের ছাগল অন্যান্য জাতের ছাগলের চেয়ে বেশি বড় হয়। এই জাতের ছাগলের ওজন
৪০ থেকে ৬০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। আপনি যদি ছাগল পালনের ব্যবসা করতে চান।
তবে আপনার উদ্দেশ্য অনুযায়ী ছাগলের জাত নির্বাচন করতে হবে। যদি আপনার
উদ্দেশ্য মাংস উৎপাদন হয়, তবে বেয়ার, ফারমের ছাগল, কালাহারি বা ক্রস জাতের
ছাগল আপনার জন্য উপযুক্ত। যদি আপনার উদ্দেশ্য
দুধ উৎপাদন হয়, তবে রাম, শিরোহি বা ক্রস জাতের ছাগল আপনার জন্য উপযুক্ত। ছাগলের বিভিন্ন
জাতের মধ্যে তাদের শারীরিক গঠন,
রং ও অন্যান্য চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। রাম ছাগলের
বাচ্চার দাম সবচেয়ে বেশি কারণ এটি অনেক দূরত্ব বড় হয় এটি দেখতে অনেক
সুন্দর হয়। রাম ছাগলের জাত অনেক ভালো। রাম ছাগলের বাচ্চার দাম হয়ে থাকে
৯,০০০ টাকা থেকে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত।
বোয়ার ছাগল এই জাতের পুরুষ ছাগলের ওজন প্রায় ৩০ থেকে ৪৫ কেজি
পর্যন্ত হয়ে থাকে। অপরদিকে বোয়ার জাতের স্ত্রী ছাগলের ওজন ১৫ থেকে ২৫ কেজি
পর্যন্ত হতে পারে। বোয়ার জাতের ছাগল প্রতিদিন গড়ে ২৫০ গ্রাম করে ওজন বাড়ে,
তিন মাসে ১৫ থেকে ৩৬ কেজি ও এক বছরে ৫০ কেজি পর্যন্ত ওজন হয় থাকে।
আরও পড়ুনঃ
ফাউমি মুরগি বছরে কয়টি ডিম পারে
কালাহারি ছাগল এই ছাগলটি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে উৎপন্ন এবং প্রধানত
মাংসের জন্য পালন করা হয়। কালাহারি জাতের ছাগলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয়
হচ্ছে। কলহারি ছাগলের মাংস অন্যান্য জাতের ছাগলের তুলনায় নরম এবং খেতে অনেক
স্বুসাদু হয়ে থাকে।
রাম ছাগল এই ছাগল অন্যান্য ছাগলের জাতের চেয়ে আকারে একটু বড় হয়।
একটি রাম ছাগলের ওজন গড়ে ২০ থেকে ৫৫ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। তবে, কোন জাতের
ছাগল পালন করা উচিত হবে তা আপনার উদ্দেশ্য উপর নির্ভর করে। যে আপনি ছাগল
মাংসের জন্য পালন করতে চান নাকি ছাগল পালন করে বেশি বাচ্চা নিতে চান সেই
দিকটি আপনাকে দেখতে হবে।
কোন জাতের ছাগল বেশি বাচ্চা দেয়
বাংলাদেশের ছাগলের জাতের মধ্যে কালো ছাগল, অথবা ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট, এই
ছাগটি অন্যান্য ছাগল জাতের চেয়ে সবচেয়ে সেরা জাতের ছাগল হিসেবে পরিচিত। এই
ছাগলের গায়ের রং মূলত কুচকুচে কালো, কিন্তু শরীরের কাঠামো শক্তপোক্ত ও
পেশীবহুল হয়ে থাকে। এর গায়ের লোম খাটো এবং শিং ছোট হয়। পূর্ণবয়স্ক পুরুষ
ছাগল প্রতি মাসে দুইবার বাচ্চা দেয়,
প্রতি বারে অন্তত দুইটি থেকে সর্বোচ্চ ৫টি পর্যন্ত বাচ্চা দিতে পারে একবারে। এই
ছাগল দুধ কম দেয়, কিন্তু মাংস পাওয়া যায়। বাংলাদেশ ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ,
ঝাড়খণ্ড, আসাম, এবং উত্তর উড়িষ্যায় এই ছগল গুলো পাওয়া যায়। ব্ল্যাক বেঙ্গল
ছাগল পরিষ্কার, শুষ্ক এবং উঁচু জায়গায় থাকতে পছন্দ করে।
এই জাতের ছাগল প্রাকৃতিক এবং কৃত্রিম উপায়ে মডিফায়েড মিলে প্রায় ১০০ থেকে
৩০০ রকমের মত জাতের ছাগল রয়েছে। কোন ধরনের ছাগল কয়টি বাচ্চা দেয় নিচে দেওয়া
হলো-
- দেশী ছাগল ১৪ মাসে দুইবার বাচ্চা দেয়।
- রাম ছাগল বা যমুনাপারি ছাগল ১২ মাসে একবার বাচ্চা দেয়।
- বিটল ছাগল ১২ মাসে ১ বার বাচ্চা দেয়।
- শিরোহি ছাগল ১২ মাসে ২ বার বাচ্চা দেয়।
- বোয়ার ১২ মাসে একবার বাচ্চা দেয়।
বাচ্চা দেওয়ার সংখ্যা ও সময়ের দিক থেকে ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট
সেরা জাত
হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু আপনার উদ্দেশ্য ও পালনের পরিবেশ অনুযায়ী আপনি
অন্য জাতের ছাগল পালন করতে পারেন।
দেশি ছাগল কত মাসে বাচ্চা দেয়
দেশী ছাগল প্রায় ১৪ মাস থেকে ১৫ মাস বয়সের মধ্যে প্রথম বাচ্চা দিয়ে থাকে।
একটি দেশি ছাগল বছরে দুইবার বাচ্চা প্রসব করতে পারে। এই ছাগলের জাত এবং
পরিবেশের উপর নির্ভর করে থাকে।তবে উপযুক্ত ব্যবস্থাপনায় ছাগল থেকে প্রায় ২-৫
টি পর্যন্ত বাচ্চা পাওয়া যেতে পারে। ছাগলের জাত এবং উপযুক্ত পরিচর্যার উপর
নির্ভর করে
আরও পড়ুনঃ
কোন কবুতর বেশি আকাশে েউড়ে
কোন ছাগল কত দিন পর
বাচ্চা দেয়। তা বিভিন্ন প্রজাতির ছাগলের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। স্ত্রী ছাগল
সাধারণত ৯-১০ মাস বয়সে প্রজননের যোগ্য হয় এবং ১৪ মাস থেকে ১৫ মাস বয়সে প্রথম
বাচ্চা দিয়ে থাকে। এই তথ্যগুলো সাধারণ পরিস্থিতিতে প্রযোজ্য হলেও, বিশেষ
পরিস্থিতিতে পরিবর্তন হতে পারে। তবে দেশি ছাগল বা ব্ল্যাক বেঙ্গল
সারা বাংলাদেশের একেবারে নিজস্ব প্রজাতি। এর মাংস ও চামড়ার গুনগত মান উচ্চ এবং
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। এই ছাগল পালন সহজ এবং পালন করার জন্য বড় কোন
জায়গার দরকার হয় না। আপনি যদি ছাগল পালন করতে চান তাহলে আপনার জন্য এই ছাগল
গুলো পালন করা ভালো হবে।
শেষ কথা
আপনাদের সকলের কাছে যদি আমার পোষ্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে পোষ্টটি আপনাদের
বন্ধু-বান্ধবী সকলের মাঝে শেয়ার করে দিন। আর নিয়মিত আমার কাছে থেকে পোষ্ট
পাওয়ার জন্য আমার ওয়েবসােইটটি ফলো করে রাখুন। নিয়মিত নতুন নতুন আপডেট পেতে
ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। পোষ্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url