আঙুর বেশি উৎপন্ন হয় কোথায়
আঙুর বেশি উৎপন্ন হয় কোথায় ও আঙ্গুর চারা কোথায় পাওয়া যায় এই সব ধরনের
বিভিন্ন সত্য তথ্য গুলো পেতে হলে আপনি এই আটিকেলটি পড়ুন। তাহলে আপনি আঙুর
সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
আপনার জন্য এই পোষ্টের নিচের দিকে আঙুর সম্পর্কে কিছু নতুন পয়েন্ট যোগ করা
হয়েছে। সে পয়েন্ট গুলো আপনি যদি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ভালো করে পড়েন। আশা করি
তাহলে আপনি এই পোষ্টের মাধ্যেমে অজানা বিষয় গুলো জানতে পারবেন।
ভুমিকা
আঙুর হলো একটি রসালো
ফল, যা লতা ধরনের গাছে ফলে থাকে। আঙুর সাধারণভাবে গোলাপ পরিবারের সদস্য এবং মধুর
স্বাদ থাকে। আঙুরের রঙ বিভিন্ন হতে পারে, যেমন সবুজ, লাল, বেগুনি, কালো, সোনালী
ইত্যাদি।
আরও পড়ুনঃ
বেদানা খেলে শরিরের কি কি উপকার হয়
আঙুর স্বাস্থ্যকর এবং
পুষ্টিকর ফল
আঙুর খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কারণ আঙুরে রয়েছে ভিটামিন কে, ভিটামিন সি,
ভিটামিন বি ১ ও ভিটামিন বি ৬ এবং খনিজ উপাদান ম্যাংগানিজ, পটাশিয়াম রয়েছে। আঙুর
থেকে রস, জেলি, মদ ও আঙুর-বীজের তেল তৈরি করা হয়।
আঙুর বেশি উৎপন্ন হয় কোথায়
আঙ্গুর
ফলটি
লতা ধরনের গাছে ফলে থাকে। আঙুর ফলটি সাধারণভাবে পাকা অবস্থায় খাওয়া হয়। প্রতি
১০০ গ্রাম পাকা আঙুর সরাসরি খাওয়া হলে আমাদের শরিরে প্রায় ২৮৮ কিলোজুল
পুষ্টিমান শক্তি পাওয়া যায়। আঙুর বেশি উৎপন্ন হয় সেই দেশগুলোতে যেখানে আঙুরের
জন্য উপযুক্ত জলবায় ও মাটি রয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় আঙুর
উৎপাদক দেশ হলো চীন যেখানে ২০১৯ সালে ১০.৭ কোটি কেজি আঙুর উৎপন্ন হয়েছিল। চীনের
পরে আঙুরের উৎপাদনে অন্যান্য শীর্ষ দেশগুলো হলো ইতালি, আমেরিকা, ফ্রান্স, স্পেন,
চিলি, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ইরান এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশে আঙুরের
উৎপাদন খুব বেশি নয়, কিন্তু এখানে আঙুর চাষ করা হয় বিভিন্ন জেলায়।
বাংলাদেশে আঙুরের উৎপাদনে শীর্ষ জেলা হলো রাজশাহী যেখানে প্রায় ১০০ হাজার টন
আঙুর উৎপন্ন হয় প্রতি বছর। রাজশাহীর পরে আঙুরের উৎপাদনে অন্যান্য জেলাগুলো হলো
নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, কুড়িগ্রাম,
লালমনিরহাট এবং পাবনা। আঙুর একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর
ফল যা বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধে সাহায্য করে। আঙুরে প্রোটিন, শর্করা, চর্বি,
ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লৌহ, খনিজ, পটাশিয়াম, থায়ামিন, রিবোফ্লাবিন, ভিটামিন এ,
ভিটামিন বি, ভিটামিন সি উপাদান রয়েছে। আঙুর দিয়ে রস, জেলি, মদ, বা আঙুর-বীজের
তেল তৈরি করা হয়।
বাংলাদেশে কি বেশি আঙ্গুর চাষ হয়
বাংলাদেশে আঙ্গুর চাষ এখন একটি উত্তরোত্তর শাখা হিসেবে গণ্য হচ্ছে। তবে বাংলাদেশে আঙ্গুর
চাষ বেশ বেড়েছে। বিভিন্ন জেলায় আঙ্গুর চাষ করে চাষীরা ভালো আয় করছেন।
বাংলাদেশে আঙ্গুর চাষের জন্য উপযুক্ত জমি ও মাটি হলো দো-আঁশযুক্ত লালমাটি, জৈবিক
সার সমৃদ্ধ কাঁকর জাতীয় মাটি এবং পাহাড়ের পাললিক মাটি।
জমি অবশ্যই উঁচু হতে হবে যেখানে পানি দাঁড়িয়ে থাকবে না এবং প্রচুর সূর্যের আলো
পড়বে এমন জায়গা আঙ্গুর চাষের জন্য নির্বাচন করতে হবে। বাংলাদেশে আঙ্গুর চাষের
সময় হলো মার্চ-এপ্রিল মাস। আঙ্গুর চারা লাগানোর পর সময়মতো সার ও পানি দিতে হবে।
আঙ্গুর গাছের কান্ড ছাঁটাই করে ফলন বৃদ্ধি করতে হবে।
আঙ্গুর চাষের পদ্ধতি ও কৌশল সম্পর্কে জানতে নিচের পয়েন্ট গুলো পড়ুন। বাংলাদেশে
আঙ্গুর চাষের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত জেলা হলো ঝিনাইদহ। এই জেলায় একজন চাষী
মাটিতে আঙ্গুর চাষে সফল হয়েছেন। তার আঙ্গুর গাছ প্রতি বছর ১৫ থেকে ২০ কেজি ফল
দেয়। এছাড়াও বাংলাদেশের আঙুর চাষের জন্য
আরও পড়ুনঃ
লিচু ফল খালি পেটে খেলে কি হয়
মাটি ও জলবায়ু বেশি উপযোগী হয়ে থাকে। বিএডিসির কাশিমপুর উদ্যান কেন্দ্রে সরকারি
পর্যায়ে আঙ্গুর উত্পাদনের প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল ১৯৯১ সালে। এখন বাংলাদেশে
আঙ্গুর চাষ প্রচলিত হয়ে উঠেছে এবং এই ফলটি বাংলাদেশের চাষীদের জন্য একটি লাভজনক
ক্ষেত্র হিসেবে গণ্য হয়েছে।
আঙ্গুর চারা কোথায় পাওয়া যায়
আঙ্গুরের চারা সাধারণত বাজারে পাওয়া যায়। এছাড়াও আঙ্গুরের চারা পাওয়া যায়
বেশিরভাগ
বাংলাদেশে, সরকারী নার্সারী সমূহের তালিকায় ছাড়াও বেসরকারী সংস্থা অথবা বিভিন্ন
নার্সারীতে পেতে পারেন। তবে এই চারা সংগ্রহ করার জন্য আপনি নিচের পয়েন্ট গুলো
দেখতে পারেন।
- আপনি আপনার বন্ধু প্রতিবেশী বা আত্মীয়ের বাগান থেকে আঙ্গুরের চারা কাটতে পারেন, যদি তারা অনুমতি দেন। এই পদ্ধতিতে আপনি আঙ্গুরের জাত ও গুণ সম্পর্কে জানতে পারেন।
- আপনি বাজার থেকে আঙ্গুরের চারা কিনতে পারেন, যদি আপনি নির্দিষ্ট কোনো জাতের আঙ্গুর চাষ করতে চান। এই ক্ষেত্রে আপনাকে চারার মান, বৃদ্ধির হার ও ফলনের সময় সম্পর্কে বিবেচনা করতে হবে।
- আপনি বন অধিদপ্তরের সরকারী নার্সারীতে ভালো ফলনের ও ঔষধিক জাতের চারা পাবেন।
- আপনি ইন্টারনেটে অনলাইনে আঙ্গুরের চারা অর্ডার করতে পারেন। যদি আপনি আপনার এলাকায় পাওয়া না যায়। এই ক্ষেত্রে আপনাকে চারার মূল্য, পরিবহন ও প্রতিস্থাপনের ব্যাপারে জানতে হবে।
আশা করি আপনি আপনার পছন্দের আঙ্গুরের চারা পেতে পারবেন। এছাড়াও আপনি যদি নিজের
বাগানে আঙ্গুর চাষ করতে চান, তবে আপনার জন্য একটি স্বাস্থ্যকর এবং ফলদায়ক চারা
খুঁজে পেতে হবে আঙ্গুরের চারা কেনার সময় কিছু বিশেষ বিবেচনা করা উচিত।
যেমন চারার বৃদ্ধির হার, সংখ্যা এবং ট্রাঙ্কের স্তরে শিকড়ের বিতরণ এছাড়াও,
আপনি যদি নিজে চারা তৈরি করতে চান। তবে আপনার জন্য একটি স্বাস্থ্যকর এবং
ফলদায়ক লতা খুঁজে পেতে হবে। তাহলে আপনি আঙুরের চারা তৈরি করতে পারবেন।
শীর্ষ তিনটি আঙ্গুর উৎপাদনকারী রাজ্য কোনটি
আঙ্গুর উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ তিনটি রাজ্য হলো চীন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইতালি। এই
তিনটি রাজ্য মিলিয়ে বিশ্বের মোট আঙ্গুর উৎপাদনের প্রায় ৫০% অংশ দায়িত্ব পালন
করে। চীন বিশ্বের সর্বাধিক আঙ্গুর উৎপাদনকারী রাজ্য হিসেবে প্রথম স্থানে রয়েছে।
২০২০ সালে চীনে ১০.৭ মিলিয়ন টন আঙ্গুর উৎপাদন হয়েছিল। চীনের সবচেয়ে বড় আঙ্গুর
উৎপাদনকারী প্রদেশ হলো শানশি, যেখানে ২.৩ মিলিয়ন টন আঙ্গুর উৎপাদন হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আঙ্গুর উৎপাদনকারী রাজ্য। ২০২০ সালে
যুক্তরাষ্ট্রে ৬.৮ মিলিয়ন টন আঙ্গুর উৎপাদন হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড়
আঙ্গুর উৎপাদনকারী রাজ্য হলো ক্যালিফোর্নিয়া, যেখানে ৫.৫ মিলিয়ন টন আঙ্গুর
উৎপাদন হয়েছিল।
ইতালি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম আঙ্গুর উৎপাদনকারী রাজ্য। ২০২০ সালে ইতালির আঙ্গুর
উৎপাদন হয়েছে ৬.১ মিলিয়ন টন। ইতালির সবচেয়ে বড় আঙ্গুর উৎপাদনকারী প্রদেশ হলো
ভেনেটো, যেখানে ১.১ মিলিয়ন টন আঙ্গুর উৎপাদন হয়েছিল। এছাড়াও বাংলাদেশের ঝিনাইদহ
জেলার মহেশপুর উপজেলা একজন চাষী দ্বারা সফলভাবে আঙ্গুর চাষ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ
সকালে খেজুর খাওয়া উপকারিতা কি
এই ফলটি সারা বিশ্বেই জনপ্রিয়, যা
বাংলাদেশের বাজারেও
পাওয়া যায়। আঙ্গুরের চাষে সফল হওয়ার জন্য মহেশপুরের মাটি বিশেষভাবে উপযুক্ত
বলে ধারণা করা হয়। এখন কৃষি কর্মকর্তারা ও চাষীরা বলছেন, বাংলাদেশের মাটিতেও
আঙ্গুর চাষ করে সফল হওয়া সম্ভব। আশা করি আপনি আপনার প্রশ্নের উত্তর পাইছেন।
লেখকের শেষ কথা
আপনাদের সকলের কাছে যদি আমার পোষ্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে পোষ্টটি আপনাদের
বন্ধু-বান্ধবী সকলের মাঝে শেয়ার করে দিন। আর নিয়মিত আমার কাছে থেকে পোষ্ট
পাওয়ার জন্য আমার ওয়েবসােইটটি ফলো করে রাখুন। নিয়মিত নতুন নতুন আপডেট পেতে
ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। পোষ্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url