পেঁপে গাছ কত দিন বাঁচে
পেঁপে গাছ কত দিন বাঁচে ও পেঁপে চাষের আধুনিক পদ্ধতি কি এই সব ধরনের সত্য খবর
জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন। তাহলে আপনি পেঁপে সম্পর্কে আরো কিছু বিস্তারিত
তথ্য জানতে পারবেন।
আপনার জন্য এই পোস্টে নিচের দিকে পেঁপে গাছের চারা রোপনের উপযুক্ত সময় ও পেঁপে
চাষ করা সম্পর্কে কিছু পয়েন্ট যোগ করা হয়েছে। সে পয়েন্ট গুলো প্রথম থেকে শেষ
পর্যন্ত ভালো করে মনোযোগ সহকারে যদি আপনি পড়েন। আশা করি তাহলে আপনি পেঁপে
সম্পর্কে নতুন কিছু বিষয় জানতে পারবেন।
ভুমিকা
পেঁপে হলো একটি ফল যা
মানুষ কাঁচা বা সবুজ অবস্থায় সবজি হিসেবে মানুষ খেয়ে থাকে। আর পাকা অবস্থায় অনেকে
ফল হিসাবে খেয়ে থাকে। পেঁপে একটি মধুর ফল, যা সাধারণভাবে সবুজ রঙের হয়। এর
ইউনানী নাম পাপিতা, আরানড খরবূযা এবং আয়ুর্বেদিক নাম অমৃততুম্বী।পেঁপে
সাধারণভাবে মিষ্টি ও সুস্বাদু হয়, এবং এটি খুবই স্বাস্থ্যকর।
আরও পড়ুনঃ
আনারস কোন মাটিতে ভালো হয়
পেঁপে বিভিন্ন খাবারে ব্যবহার করা যায়, যেমন ফলশাক, মিষ্টি, চা, স্যান্ডউইচ,
স্মুদি, জ্যুস, স্যালাদ, পানির জুস, এবং আরও অনেক কিছু। পেঁপে সমৃদ্ধ ভিটামিন,
মিনারেল, এবং ফাইবারের উৎস হয়, যা আপনার
শারীরিক স্বাস্থ্য
উন্নত করতে সাহায্য করে। পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং
ভিটামিন ই রয়েছে। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং
শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। পেঁপেতে থাকা ভিটামিন সি ত্বক, চুল ও মাড়ির
জন্য খুবই উপকারী। এছাড়াও এ ফল চোখের জন্য খুব উপকারী। পেঁপে চাষ করা একটি
লাভজনক ব্যবসা হতে পারে কৃষকদের জন্য। জমিতে পেঁপে চাষ করে ভালো মুনাফা কামানো
সম্ভব। এমনকি জমিতে পেঁপে চাষ করার জন্য ভারতের বিহার সরকার কৃষকদের ৭৫ শতাংশ
পর্যন্ত ভর্তুকি দিয়ে থাকে।
পেঁপে গাছ কত দিন বাঁচে
পেঁপে গাছ একটি ছোট আকৃতির অশাখ বৃক্ষবিশেষ যা প্রায় সারা বছরেই
ফল
দেয় এর জীবনকাল নির্ভর করে উপযুক্ত পরিবেশ, যত্ন এবং পানির সরবরাহ উপর।
সাধারণত, একটি সুস্থ পেঁপে গাছ বেশ ৫ থেকে ৮ বছর বাঁচতে পারে। কিন্তু পেঁপে
গাছের জাত, পরিচর্যা, রোগ ও আক্রমণের উপর নির্ভর করে। পেঁপে গাছর ফল একটি
স্বপ্ল মেয়াদি ফল, যা অল্প জায়গাতেই চাষ করা যায়।
পেঁপে চাষের জন্য উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি ভাল। পেঁপে গাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে
পারে না। পেঁপের জন্য সেচ সুবিধাযুক্ত এবং জলাবদ্ধতা মুক্ত জমি প্রয়োজন।
বাড়ির আঙ্গিনায় অল্প কিছু গাছ লাগিয়ে সারা বছর সবজি ও ফল পাওয়া যায়।
পেঁপের চাষের আধুনিক পদ্ধতি সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো-
- জাত নির্বাচন পেঁপের সবথেকে প্রচলিত জাতগুলো হলো- রাচি, রেড লেডি, সুইট লেডি, শাহী পেঁপে, যশোরি, বলুস্টেম, ছোট পেঁপে, কাশিমপুরী, হাইব্রীড সহ প্রভৃতি জাত সমুহ। উল্লেখিত জাতগুলোর মধ্যে বর্তমানের সব থেকে ট্রেন্ডি জাত হলো সুইট লেডি জাত।
- পেঁপে চাষের জমি কয়েকবার চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুরা করে মই দিয়ে তৈরি করতে হবে।
- জমিতে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য বেড পদ্ধতি অবলম্বন করা অতি তারাতারি উত্তম।
- পানি নিষ্কাশনের জন্য বেড থেকে বেডের মাঝে ৩০ সেমি চওড়া ও ২০ সেমি গভীর নালা থাকবে।
পেঁপে চাষের উপযুক্ত সময় কোনটি
পেঁপে চাষের উপযুক্ত সময় বিভিন্ন পর্যায়ে পরিবর্তিত হতে পারে। এছাড়াও পেঁপে
চাষের জন্য উপযুক্ত সময় হলো আশ্বিন ও পৌষ মাস। এই সময় বীজ লাগানোর ৪০ থেকে
৫০ দিন পর মাঘ-ফাল্গুণ মাসে চারা রোপণের উপযোগী হয়। তবে এপ্রিল, সেপ্টেম্বর
ও অক্টোবর মাসেও পেঁপে চারা রোপণ করা যায়। এই সময়ে পেঁপে গাছে সাধারণত ৪
থেকে ৫ মাসে ফুল
আরও পড়ুনঃ
ডাবের শাসের উপকারিতা কি
ধরে এবং ৬ থেকে ৭ মাসে পরিপক্ব পেঁপে ফল সংগ্রহ করা যায়। এই সময়গুলো
মোটামুটি পেঁপে চাষের জন্য সবচেয়ে ভাল সময় হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। পেঁপে
চাষের জন্য উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি ভাল। পেঁপে গাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে
না। পেঁপের জন্য সেচ সুবিধাযুক্ত এবং জলাবদ্ধতা মুক্ত জমি প্রয়োজন।
পেঁপে গাছের জন্য
শীতকালে
প্রতি ১০ থেকে ১১ দিন পর পর এবং গ্রীস্মকালে ৫ থেকে ৬ দিন পর পর সেচ দেয়ার
প্রয়োজন হয়। মনে রাখতে হবে যেন গাছের গোড়ায় পানি না জমে। তার জন্য নালা
কেটে সেচ দিতে হবে। উন্নত পদ্ধতিতে পেঁপে চাষ করে সফলতা পেতে হলে এই সময়গুলি
মেনে চলুন।
পেঁপে চাষের আধুনিক পদ্ধতি কি
পেঁপে চাষের আধুনিক পদ্ধতি হলো বাণিজ্যিক ভাবে উন্নত জাতের হাইব্রিড পেঁপে
চাষ করা। এই পদ্ধতিতে পেঁপের চারা পলিব্যাগে তৈরি করা হয় এবং জমিতে বেড
পদ্ধতি অনুসরণ করে রোপণ করা হয়। পেঁপের গাছে সময়মতো সার ও সেচ দিয়ে দ্বিগুণ
ফলন পাওয়া যায়। পেঁপে চাষের আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে আপনি উন্নত ফলন পেতে
পারেন।
আরও পড়ুনঃ
লেবু খাওয়ার নিয়ম
আপনি নিচের পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করতে পারেন।
- জাত নির্বাচন করে বিভিন্ন জাতের পেঁপে চাষ করা হয়ে থাকে। প্রচলিত জাতগুলো হলো- রাচি, রেড লেডি, সুইট লেডি, শাহী পেঁপে, যশোরি, বলুস্টেম, ছোট পেঁপে, কাশিমপুরী, হাইব্রীড সহ প্রভৃতি জাত সমুহ।
- জমি নির্বাচন পেঁপে চাষের জন্য উপযুক্ত জমি নির্বাচন করুন। জমি জলাবদ্ধতা মুক্ত এবং সেচ সুবিধাযুক্ত হতে হবে।
- চারা রোপণ প্রতিটি গর্তে ১টি পেঁপে চারা রোপণ করুন। পরাগায়নের জন্য প্রতিটি বাগানে ১৫% পুরুষ গাছ রোপণ করা হবে। ফুল থেকে ফলে রুপ নেয়ার পরে একটি বোটা থেকে অন্য ফল আপনি ছিড়ে ফেলতে পারেন।
- আগাছা ব্যবস্থাপনা গাছের আশপাশের আগাছা পরিস্কার রাখুন। গাছ বাতাসে না ভাঙ্গে তার জন্য প্রতিটি গাছের ৬ ইঞ্চি দুরে খুটি পুতে গাছের সাথে বেধে দিন।
- পেঁপে গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি অনুসরণ করা প্রয়োজন। প্রতি গাছে ৫০০ গ্রাম করে ইউরিয়া এবং এমওপি সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
- এই পদক্ষেপগুলি মেনে চললে আপনি পেঁপে চাষ করে বেশি ভালো ফলন পাবেন।
পেঁপে চারা রোপণ পদ্ধতি কি কি
পেঁপে চারা রোপণ পদ্ধতি হলো নিম্নরূপ
- প্রথমে জমি চাষ দিয়ে বেড করে নিতে হবে, প্রতি বেড এর পাস দিয়ে নালা করতে হবে।
- প্রতি ৪ ফিট দুরে দুরে পেঁপে চারা রোপন করতে হবে।
- পেঁপে চারা রোপনের স্থানে গর্ত করে ৩ দিন ফেলে রাখতে হবে।
- প্রতি গর্তে দানা বিষ ও কম্পস্ট সার দিয়ে পূরণ করতে হবে।
- প্রতি গর্তে ৩ টি করে চারা রোপন করতে হবে।
- পেঁপে চারা বড় হওয়ার পর, ভালো চারা টি রেখে বাকি চারা গুলো কেটে ফেলতে হবে।
এছাড়াও, আপনি পেঁপে চাষের জন্য দোঁআশ ও বেলে দোঁআশ মাটিতে পেঁপে চাষ করতে
পারেন। পেঁপে চাষের জন্য বর্গাকার পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় পরাগায়ণের
সুবিধার জন্য বাগানে ১০% পুরুষ গাছ রাখা দরকার।
শেষ কথা
আপনাদের সকলের কাছে যদি আমার পোষ্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে পোষ্টটি আপনাদের
বন্ধু-বান্ধবী সকলের মাঝে শেয়ার করে দিন। আর নিয়মিত আমার কাছে থেকে পোষ্ট
পাওয়ার জন্য আমার ওয়েবসােইটটি ফলো করে রাখুন। নিয়মিত নতুন নতুন আপডেট
পেতে ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। পোষ্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url