আনারস কোন মাটিতে ভালো হয়
আনারস কোন মাটিতে ভালো হয় ও আনারস খেলে কি ক্ষতি হয়। এইসব আনারস সম্পর্কে
জানতে হলে আপনি আমাদের সাথেই থাকুন। তাহলে আপনি উপরের তথ্য গুলো আলোকে তথ্য
গুলো পাবেন।আপনার জন্য এই পোষ্টের নিচে আনারস কোন ঋতুতে হয়ে থাকে এইসব সম্পর্কে আরো কিছু
পয়েন্ট যোগ করা হয়েছে। আপনি যদি এই পয়েন্ট গুলো প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ
সহকারে পড়েন। তাহলে আপনি আনারস সম্পর্কে অনেক ধরনের বিষয় গুলো বুজতে পারবেন।
ভুমিকা
আনারস হলো একটি রসালো ও সুস্বাদু ও মিষ্টি ফল, যা বিশ্বের অনেক দেশে চাষ করা
হয়। এই ফলে ভিটামিন এ, সি, বি-৬, ফলেট, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ,
পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন ব্রোমেলেন
রয়েছে। এই উপাদানগুলি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি।
আরও পড়ুনঃ
ডাব খাওয়ার উপকারিতা কি
আনারস খেলে হজম শক্তি বাড়ে, সর্দি-কাশি দূর হয়, হাড় ও চোখের অসুস্থতা কমে, ওজন
নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে,
ত্বকের সৌন্দর্য
বাড়ায় ও কৃমি প্রতিরোধে কাজ করে থাকে। এটি সাধারণভাবে স্বাদিষ্ট এবং সমৃদ্ধ
স্বাস্থ্যকর খাবার। এটি মুখের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে এবং সূর্যে
রোধ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে।
আনারস স্বাদে মিষ্টি এবং তাপমাত্রা বাড়ানোর জন্য একটি অপ্টিমাল ফল। আনারস এক
প্রকারের গুচ্ছফল যা দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের মূল। এটি বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে
চাষ করা হয়, কিন্তু কোস্টারিকা, ব্রাজিল এবং ফিলিপাইন এই তিনটি দেশ একত্রে
বিশ্বের সমগ্র আনারস উৎপদনের প্রায় এক তৃতীয়াংশ উৎপাদন করে।
আনারস কোন মাটিতে ভালো হয়
আনারস একটি ফলমূল যা বিশেষভাবে পানির জমিতে ভালো চাষ হয়। আনারস একটি উষ্ণানুমান
ফল
যা দোঁআশ মাটিতে ভালো জন্মে। দোঁআশ মাটি হলো এমন মাটি যে বালিতে আলু চাষ করা
হয়। এই ধরনের মাটি পানি সংরক্ষণ করে রাখে এবং আনারসের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি
উপাদান সরবরাহ করে। আনারস চাষের জন্য মাটির পিএইচ স্তর ৪.৫ থেকে
৬.৫ এর মধ্যে থাকা উচিত। মাটি যদি অতি ক্ষারীয় হয় তাহলে আনারসের গাছ বিকল
হয়ে যায়। মাটি যদি অতি অম্লীয় হয় তাহলে আনারসের ফল মিষ্টি হয় না। আপনি
আনারস গাছ লাগাতে চান তা হলে, নিশ্চিত করুন যে মাটি পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করতে
সক্ষম হয়।
আনারস চাষের সময় বিভিন্ন প্রকারের সমস্যা হতে পারে, যেমন বালাই আক্রমণ এই
ধরনের সমস্যার সমাধানের জন্য স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ইউনিয়ন
পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তা অথবা উপজেলা কৃষি অফিসে পরামর্শ আপনি নিতে পারেন।
আনারস কোন ঋতুতে হয়ে থাকে
আনারস একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় ফল যা বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফলের মধ্যে
একটি। এটি সারা বছরই পাওয়া যায় তবে বসন্ত (মার্চ-মে) এবং গ্রীষ্ম (জুন-আগস্ট)
মাসে আনারস সবচেয়ে সুস্বাদু হয়। এই সময়ে আনারসের রস বেশি থাকে এবং স্বাদও
বেশি মিষ্টি হয়। আনারসে রয়েছে ব্রোমেলিন নামক একটি অ্যাসিড যা প্রোটিন ভাঙ্গার
কাজ করে। এই অ্যাসিডের কারণে আনারস খাওয়ার
আরও পড়ুনঃ
প্রতিদিন ডাব খেলে কি হয়
পর দুধ খাওয়া উচিত নয়, কারণ এটি দুধের প্রোটিনকে ভাঙ্গে ফেলে দেয়। একই কারণে
বেশি পরিমাণে আনারস খেলে মুখের ভিতরের ত্বক ও জিহ্বা কাটা লাগতে পারে। তাই
আনারস খাওয়ার পর কমপক্ষে ২ ঘন্টা পর দুধ খাওয়া উচিত।আনারস প্রধানত শীতকালে
ফুল ফোটানোর সময়ে হয়ে থাকে। এটি সাধারণভাবে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে ঘটে।
এই সময়ে আনারসের ফুল সুন্দর ও মধুর স্বাদে পূর্ণ হয়।
আনারস খেলে কি ক্ষতি হয়
আনারস একটি মিষ্টি, রসালো, তৃপ্তিকর ও সুস্বাদু ফল, যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক
উপকারী। এতে ভিটামিন এ, সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস এবং ব্রোমেলিন নামক
এনজাইম রয়েছে। ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ ও ক্যালোরি রয়েছে। যা আমাদের শরিরের
হজমশক্তি, পুষ্টি, চোখের যত্ন,
সর্দি
জ্বর রোগের প্রতিরোধ, হাড়ের সুস্থতা, ক্রিমিনাশক
ইত্যাদি কাজে সাহায্য করে। তবে আনারস খেলে কিছু ক্ষতি হতেও পারে সে গুলো নিচে
দেওয়া হলো-
- আনারস একটি অ্যাসিডিক এবং টকজাতীয় ফল, যা কাঁচা খেলে বা খালি পেটে খেলে গ্যাস্ট্রিক, অ্যাসিডিটি, পেট ফাঁপা, পেট খারাপ ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।
- আনারসে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি থাকে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। এতে রক্তে চিনির মাত্রা বাড়ে, যা রোগীর অবস্থা আরও খারাপ করে।
- আনারসের কাঁটা দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। যাদের দাতে কেভিটিস বা জিংজাইভেটিভস এর সমস্যা আছে, তাদের আনারস না খাওয়াই ভালো।
- আনারসের কিছু উপাদান কারো কারো এলার্জি বা বিভিন্ন চুলকানি ও ফুস্কুড়ি দেখা দিতে পারে।
- তাই আনারস খেতে হলে পরিমিত পরিমাণে এবং সঠিক সময়ে খেতে হবে। আনারস খেলে কোনো বিষক্রিয়া হয় না, তবে এর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া থেকে বাঁচতে হলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মনে রাখতে হবে
- আনারস খাওয়ার পর কমপক্ষে দুই ঘণ্টা পর পর্যন্ত দুধ খাওয়া উচিত নয়।
- আনারস খাওয়ার পর কমপক্ষে এক ঘণ্টা পর পর্যন্ত কোনো টকজাতীয় ফল বা খাবার খাওয়া উচিত নয়।
বাংলাদেশের কোন কোন জেলায় ভালো আনারস হয়
আনারস হল একটি সুস্বাদু ও
পুষ্টিকর ফল। বাংলাদেশে আনারস বিভিন্ন জেলায় চাষ করা হয়, কিন্তু সবচেয়ে ভালো ও বেশি
আনারস চাষ হয় টাঙ্গাইল জেলায়। টাঙ্গাইলের আনারস রসে মধুর এবং গন্ধে মুগ্ধকর।
টাঙ্গাইলের আনারসের জন্য বাংলাদেশের অন্যান্য জেলাগুলি থেকে বেশি চাহিদা
রয়েছে। বাংলাদেশের অন্যান্য কিছু জেলা যেখানে আনারস চাষ করা হয়।
তার মধ্যে রয়েছে ঢাকা, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা,
নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, ময়মনসিংহ,
নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, শেরপুর, রাজশাহী, বগুড়া, নড়াইল, মাগুরা, ঝিনাইদহ,
খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ইত্যাদি।
আরও পড়ুনঃ
রতে ফল খাওয়ার উপকারিতা আছে না নাই
আনারস চাষের জন্য উপযুক্ত মাটি হল বালুময় বা বালুমিশ্র মাটি। আনারস চাষের জন্য
মাটির পিএইচ হতে হবে ৫.৫ থেকে ৬.৫ হওয়া উচিত। আনারস চাষের জন্য বার্ষিক বৃষ্টির
পরিমাণ হতে হবে ১০০০ থেকে ১৫০০ মিলিমিটার। আনারস চাষের জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা
হল ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শেষ কথা
আপনাদের সকলের কাছে যদি আমার পোষ্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে পোষ্টটি আপনাদের
বন্ধু-বান্ধবী সকলের মাঝে শেয়ার করে দিন। আর নিয়মিত আমার কাছে থেকে পোষ্ট
পাওয়ার জন্য আমার ওয়েবসােইটটি ফলো করে রাখুন। নিয়মিত নতুন নতুন আপডেট পেতে
ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। পোষ্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url